নিয়মিত লেখাপড়ার ফ্লো ধরে রাখার গুরুত্ব এবং ঠিকভাবে তা করার ৪টি কার্যকর উপায়
লেখাপড়া উদ্দেশ্য অনেক বিস্তৃত, কিন্তু আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার অধিকাংশ ই পরীক্ষার সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবনে পরীক্ষার ভূমিকা অনেক, সেই পরীক্ষা আবার পাব্লিক পরীক্ষা হলে তো কথাই নেই। পরীক্ষার কাঙ্ক্ষিত ফল লাভের জন্য কত ত্যাগ, কত রাতজাগা চেষ্টা। কিন্তু এত চেষ্টার পর ও কাঙ্ক্ষিত ফল অনেকসময় ই ধরা দেয়না।
এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো পরীক্ষার আগে অনেক পরিশ্রম করলেও সারাবছর নিয়মিত লেখাপড়া না করা। নিয়মিত পড়ালেখার গুরুত্ব আমাদের কারোই অজানা নয় কিন্তু জানলেও আমরা বিষয়টি ঠিকভাবে উপলব্ধি করিনা।
সারাবছর অল্প করে পড়াও কেন শুধু পরীক্ষার আগে অনেক বেশি পড়ার চেয়ে কাজে দেয়? পড়ার পরেও পরীক্ষার হলে পার্ফর্ম্যান্স আশানুরূপ না হওয়ার কারণ ই বা কি?
এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো পরীক্ষার আগে অনেক পরিশ্রম করলেও সারাবছর নিয়মিত লেখাপড়া না করা। নিয়মিত পড়ালেখার গুরুত্ব আমাদের কারোই অজানা নয় কিন্তু জানলেও আমরা বিষয়টি ঠিকভাবে উপলব্ধি করিনা।
নিয়মিত লেখাপড়ার ফ্লো ধরে রাখার গুরুত্ব
এখন আমি শেয়ার করবো সারাবছর নিয়মিতভাবে পড়ালেখার গুরুত্ব,কিভাবে সেটা পরীক্ষার ফল ভালো করতে সরাসরি সাহায্য করে এবং লেখাপড়ার ফ্লো ঠিক রাখার উপায়।সারাবছর অল্প করে পড়াও কেন শুধু পরীক্ষার আগে অনেক বেশি পড়ার চেয়ে কাজে দেয়? পড়ার পরেও পরীক্ষার হলে পার্ফর্ম্যান্স আশানুরূপ না হওয়ার কারণ ই বা কি?
সমাধান খোঁজার প্রথম ধাপ ই হলো সমস্যা শনাক্ত করা। ক্ষত সঠিকভাবে শনাক্ত করা গেলেই সেখানে ঔষধ লাগানো যায়। পরীক্ষার হলে পার্ফর্ম্যান্স আশানুরূপ না হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রচলিত ২টি সমস্যা হলোঃ
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, মানুষের স্মৃতিতে কোন কিছু তখন ই স্থায়ী হয় যখন মস্তিষ্ক বোঝে যে এটা মনে রাখাটা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেটা করার একমাত্র উপায় হলো মস্তিষ্ককে দিয়ে কোন জিনিস বারবার মনে করানো। এক্ষেত্রে শুধু পড়াটা সব সময় কার্যকর না, বারবার নিজেকে পড়া ধরলে মস্তিষ্ক এর সেটা ভালো মনে থাকে।
- পড়ে যাওয়ার পর ও হলে গিয়ে উত্তর মনে আসছে না।
- উত্তর জানা থাকলেও সময়ের অভাবে ঠিকঠাক সব শেষ করে আসা যাচ্ছে না।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, মানুষের স্মৃতিতে কোন কিছু তখন ই স্থায়ী হয় যখন মস্তিষ্ক বোঝে যে এটা মনে রাখাটা তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সেটা করার একমাত্র উপায় হলো মস্তিষ্ককে দিয়ে কোন জিনিস বারবার মনে করানো। এক্ষেত্রে শুধু পড়াটা সব সময় কার্যকর না, বারবার নিজেকে পড়া ধরলে মস্তিষ্ক এর সেটা ভালো মনে থাকে।
এই জিনিসটাকে বলা হয় active recall। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পর ভালোভাবে আত্মস্থ হওয়া কোন তথ্য ও মানুষ ভুলে যাওয়া শুরু করে৷ এটা থামানোর একমাত্র উপায় সেই তথ্যকে নিয়মিত বিরতিতে মনে করা, বা active recall করা। এই কাজ টাকে বলা হয় spaced repetition। এভাবে পড়া দীর্ঘসময় মনে ও থাকে, পাশাপাশি দ্রুত উত্তর ও করা যায়।
সমস্যা দুটো কাটানোর উপায় নাহয় পাওয়া গেলো, কিন্তু নিয়মিতভাবে পড়ার ফ্লো ধরে রাখার উপায়?
অনেক ছাত্রের ই মত যে কোন বিষয় পড়ে আয়ত্ত করার চেয়ে নিয়মিত ঠিকঠাক ভাবে পড়তে বসা বেশি কঠিন। এই কঠিন কাজ টিকেই কিভাবে সহজে করা যায় তা নিয়েই ৪টি কার্যকর টিপস দেওয়া হচ্ছে নিচেঃ
সমস্যা দুটো কাটানোর উপায় নাহয় পাওয়া গেলো, কিন্তু নিয়মিতভাবে পড়ার ফ্লো ধরে রাখার উপায়?
অনেক ছাত্রের ই মত যে কোন বিষয় পড়ে আয়ত্ত করার চেয়ে নিয়মিত ঠিকঠাক ভাবে পড়তে বসা বেশি কঠিন। এই কঠিন কাজ টিকেই কিভাবে সহজে করা যায় তা নিয়েই ৪টি কার্যকর টিপস দেওয়া হচ্ছে নিচেঃ
কারণ শনাক্তকরণঃ
আগে কেন পড়া হচ্ছে না তার কারণ চিহ্নিত করতে হবে। তার কারণ হতে পারে অনেক কিছু, প্রধান কিছু কারণ হলোঃ- অতিরিক্ত পরিকল্পনা করাঃ নিজের উপর অত্যধিক আশা করা এবং পূরণ করতে না পেরে হতাশ হয়ে যাওয়া।
- পড়তে বসলে মাথায় অন্য চিন্তা আসেঃ সেই চিন্তা করতে করতেই সময় পাড় হয়ে যায়।
- পড়তে বসলে প্রচুর ঘুম পায়ঃ মোবাইল ফোন, কোন ডিভাইস, বিনোদনের কোন মাধ্যম বা খেলাধুলায় আসক্তি আমাদের ফ্লো কে নষ্ট করতে ভূমিকা রাখে।আর একবার ফ্লো হারিয়ে গেলে ফিরে পাওয়া কঠিন।
- পড়ায় মনোযোগ থাকেনাঃ পড়া জমে গিয়েছে। এখন পড়তে বসলেই টেনশন হয়, টেনশনে পড়াও হয়না।
১) পরিকল্পনা
পরিকল্পনা করাটা আমরা যেকোন দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপের খুব ই গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করি কিন্তু গবেষণা বলছে যে খুব মানুষ ই সবসময় একটা খুব ই টাইট শিডিউল পুরোপুরি অনুসরণ করতে পারে(বি.দ্রঃ অল্প কিছুদিন বা বিশেষ সময়ের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়- যেমন- ভর্তিযুদ্ধের মৌসুম।এখানে সবসময়ের কথা বলা হচ্ছে)।ফলশ্রুতিতে আসে হতাশা, এবং সেখানে থেকে নিজের উদ্যমের অপমৃত্যু। তাই পরিকল্পনা করার চেয়ে কাজ করার দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়াই ভালো।
নিজের জন্য ফ্লেক্সিবল একটা রুটিন বানানো। দিনের নির্দিষ্ট ৩-৪ ঘন্টা শুধুমাত্র একটা কাজের জন্য নির্দিষ্ট করা যে আমি বাকি দিন যাই করি এই সময়টা এই কাজ ই করবো। বা এই সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট কোন কাজ না করার লক্ষ্য নেওয়া৷ আস্তে আস্তে ব্লক করা টাইম বাড়তে পারে তবে শুরুতে এর বেশি না নেওয়াই ভালো।
মোটকথা আপনার যদি শুরু করতেই সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অগোছালো ভাবে হলে ও ছোট করে শুরু করা উচিৎ। অহেতুক নিজের জন্য শুরুতেই জটিল বানানোর প্রয়োজন নেই। ভবিষ্যতে অ্যাডজাস্ট করবেন।
একবার ফ্লো গেলে ফিরে পাওয়া বেশ কঠিন।তাই অল্প হলেও প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পড়ার অভ্যাস রাখতে হবে। একেবারে বাদ দেওয়া যাবেনা
প্ল্যান একেবারে পিনপয়েন্ট হতে হবে। পরিকল্পনা এমন হবেনা যে, আমি এই ২ দিনে এই পড়াগুলো শেষ করবো।পরিকল্পনা হবে আমি আজকে এতটা বাজে পড়তে বসবো। এভাবে পরিকল্পনা করলে কাজ নিয়ে বসে থাকা হয়না সাধারণত।
এজন্য প্রথমে একে সমস্যা হিসেবে মনে করতে হবে।এরমকম কল্পনা করে মজা পাওয়া টা যে ক্ষতিকর সেটা মানতে হবে। প্রায় ৬০% মানুষ বিভিন্ন মাত্রায় এই সমস্যাটিতে ভোগে। এর যদিও কোন সরাসরি সমাধান নেই, কিন্তু এরকম থেকে বাঁচার জন্য কোন কাজ করতে যাওয়ার সময় স্টপ ওয়াচ নিয়ে সময় ধরে করলে সুবিধা পাওয়া যায়।
সঠিকভাবে কাজ করার উপযোগী পরিকল্পনা করার উপায়ঃ
সাপ্তাহিক, মাসিক এভাবে লক্ষ্য ঠিক না করে একটা আল্টিমেট গোল সেট করা আর সেই অনুযায়ী প্রতিদিন ছোট আর সহজ লক্ষ্য নির্ধারণ করা। লক্ষ্য পূরণ করতে সক্ষম না হলে শুরুতে একদম ই ছোট আর সহজ লক্ষ্য নিয়ে সময়ের সাথে সাথে কঠিন করা উচিৎ। যেমন লক্ষ্য এমন হবে না যে আমি এই ৩ মাসে পুরো সিলেবাস শেষ করবো, লক্ষ্য হবে আমি আজকে পূর্ণ ৩ ঘন্টা মনোযোগ দিয়ে পড়বো।নিজের জন্য ফ্লেক্সিবল একটা রুটিন বানানো। দিনের নির্দিষ্ট ৩-৪ ঘন্টা শুধুমাত্র একটা কাজের জন্য নির্দিষ্ট করা যে আমি বাকি দিন যাই করি এই সময়টা এই কাজ ই করবো। বা এই সময়ের মধ্যে নির্দিষ্ট কোন কাজ না করার লক্ষ্য নেওয়া৷ আস্তে আস্তে ব্লক করা টাইম বাড়তে পারে তবে শুরুতে এর বেশি না নেওয়াই ভালো।
মোটকথা আপনার যদি শুরু করতেই সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অগোছালো ভাবে হলে ও ছোট করে শুরু করা উচিৎ। অহেতুক নিজের জন্য শুরুতেই জটিল বানানোর প্রয়োজন নেই। ভবিষ্যতে অ্যাডজাস্ট করবেন।
একবার ফ্লো গেলে ফিরে পাওয়া বেশ কঠিন।তাই অল্প হলেও প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় পড়ার অভ্যাস রাখতে হবে। একেবারে বাদ দেওয়া যাবেনা
প্ল্যান একেবারে পিনপয়েন্ট হতে হবে। পরিকল্পনা এমন হবেনা যে, আমি এই ২ দিনে এই পড়াগুলো শেষ করবো।পরিকল্পনা হবে আমি আজকে এতটা বাজে পড়তে বসবো। এভাবে পরিকল্পনা করলে কাজ নিয়ে বসে থাকা হয়না সাধারণত।
২) পড়তে বসলে মাথায় অন্য চিন্তা আসা/ঘুম পাওয়া
কারো কাছে কোন কাজ বোরিং লাগলে তার সেই কাজ করার সময় ঘুম আসা বা মাথায় অন্য চিন্তা আসার ব্যাপারটা সাধারণত হয়ে থাকে। মানুষ কোন কিছু নিয়ে চিন্তা করে বা নিজেকে কোন জায়গায় কল্পনা করে, নিজের কোন ইচ্ছা /আশা কে কল্পনা করে মজা পায়।একে বলা হয় "maladaptive daydreaming"। এটা আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিকর কিছু বলে মনে হয়না কিন্তু এটা আমাদের কর্মস্পৃহা কে নষ্ট করে।এজন্য প্রথমে একে সমস্যা হিসেবে মনে করতে হবে।এরমকম কল্পনা করে মজা পাওয়া টা যে ক্ষতিকর সেটা মানতে হবে। প্রায় ৬০% মানুষ বিভিন্ন মাত্রায় এই সমস্যাটিতে ভোগে। এর যদিও কোন সরাসরি সমাধান নেই, কিন্তু এরকম থেকে বাঁচার জন্য কোন কাজ করতে যাওয়ার সময় স্টপ ওয়াচ নিয়ে সময় ধরে করলে সুবিধা পাওয়া যায়।
কাজের শুরুতে স্টপওয়াচ ছেড়ে কতক্ষণ এরকম চিন্তা ছাড়া কাজ করা গেলো সেটা খেয়াল করতে হবে। চিন্তা আসলে এটা করা যাবেনা মেনে নিয়ে কাজে ফেরার চেষ্টা করতে হবে।শুরুতে যদি সম্ভব নাও হয়, ধীরে ধীরে চিন্তা ছাড়া কাজের সময় বাড়াতে হবে। নিজের চিন্তা কিভাবে দূর করে কাজে মনোযোগ ফেরানো যায় তার উপায় ও বাতলাতে হবে। সাধারণত মানুষের কাছে কোন কাজ বোরিং মনে না হলে " maladaptive daydreaming" হয়না।
এই সমস্যা থেকে পরিত্রানের জন্য android phone এ digital wellbeing নামে একটি ফিচার আছে। এতে দেখা যায় ফোনে কোন ব্যক্তি কতক্ষণ কি করেছে। পাশাপাশি অ্যাপে টাইমার ও সেট করা যায়। কোন অ্যাপের টাইমারে ধার্যকৃত সময় শেষ হয়ে গেলে অ্যাপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এরবাইরে সকল সোশাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশনের নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখাও অনেক কাজে দেয়।
পরিশেষে, অনেক চেষ্টা করার পর ও আসলে সব সময় পরিকল্পনা শতভাগ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়না।মানুষ নিজের কাজ নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয়না।এরপর ও সঠিক উপায়ে দীর্ঘমেয়াদে লেগে থাকতে পারলেই ধরা দেয় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। সকলের জন্য শুভকামনা।
৩) ডিভাইস আসক্তি
ডিভাইস আসক্তি সময়ের অন্যতম সমস্যা। প্রচুর পরিমাণে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করলে আমরা বিভিন্ন রকম তথ্য প্রতিনিয়ত পেতে থাকি।কোন নির্দিষ্ট এক দিকে মনোযোগ রাখিনা।এতে আমাদের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর কারণে মানুষের অলসতা ও বৃদ্ধি পায়।এই সমস্যা থেকে পরিত্রানের জন্য android phone এ digital wellbeing নামে একটি ফিচার আছে। এতে দেখা যায় ফোনে কোন ব্যক্তি কতক্ষণ কি করেছে। পাশাপাশি অ্যাপে টাইমার ও সেট করা যায়। কোন অ্যাপের টাইমারে ধার্যকৃত সময় শেষ হয়ে গেলে অ্যাপ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এরবাইরে সকল সোশাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশনের নোটিফিকেশন বন্ধ করে রাখাও অনেক কাজে দেয়।
৪) পড়া জমানো
পড়া জমে গেলে সেই পড়ার পরিমাণ দেখে আমরা অবশ হয়ে যাই, ইচ্ছা হারিয়ে ফেলি।এটি কাটিয়ে ওঠার উপায় হচ্ছে পড়াকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে একেকটা আলাদা আলাদা শেষ করা। এভাবে প্রতিটা অংশ শেষ করতে করতে কোন সময় পুরো পড়া শেষ হয়ে যাবে টের ও পাবেননা!পরিশেষে, অনেক চেষ্টা করার পর ও আসলে সব সময় পরিকল্পনা শতভাগ বাস্তবায়ন সম্ভব হয়না।মানুষ নিজের কাজ নিয়ে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হয়না।এরপর ও সঠিক উপায়ে দীর্ঘমেয়াদে লেগে থাকতে পারলেই ধরা দেয় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য। সকলের জন্য শুভকামনা।
Comments
Post a Comment