ভর্তি পরীক্ষা ভালো করার ৯ টি মূলমন্ত্র
প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাকে ভর্তিযুদ্ধের সাথে তুলনা করা হয়। কারণ বর্তমান সময়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী আর প্রক্ষান্তরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় মাত্র স্বল্প সংখ্যক শিক্ষার্থী।
মাত্র এক দেড় ঘন্টার পরীক্ষার ফলাফল একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিয়ে থাকে। তাই এই পরীক্ষা প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একজন সচেতন ভর্তি যোদ্ধা হিসেবে তাই আপনাকে বিচক্ষণতার সাথে প্রতিটি ধাপ পার করতে হবে।
আর সেই সাথে পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু টিপস ব্যাবহার করে আপনিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় আসনগুলো থেকে নিজের জন্য একটি আসন সুনিশ্চিত করতে পারেন।
ভর্তি পরীক্ষা ভালো করার ৯ টি মূলমন্ত্র
তো এখন জেনে নেওয়া জাক, ভর্তি পরীক্ষা ভালো করার ৯ টি মূলমন্ত্র। যে গুলো ফলো করলে আশা করি আপনি ভাল করে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারেন সেই সাথে অন্যান্য ভর্তিযোদ্ধাদের থেকে একধাপ এগিয়ে থাকবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে চলে যাই ভর্তি পরীক্ষা ভালো করার ৯ টি মূলমন্ত্র গুলো বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায়।
বর্তমান সময়ে A+ এবং পাশের হার বৃদ্ধি পাবার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার দরুন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আসনের বিপক্ষে শতাধিক শিক্ষার্থীকে লড়াই করতে হচ্ছে।
আর তাই এখানে ভালো করার জন্য শুধু গতানুগতিক ধারাতে পড়াশোনা করে আগাতে চাইলে চান্স পাওয়া অনেক মুশলিল হয় যাবে আর তাই প্রয়োজন টিপস এবং ট্রিকস ও কিছু মূলমন্ত্র। আর এই রকমই ৯ টি মূলমন্ত্র হলোঃ
১। নিয়মিত পড়াশোনা
ভর্তি পরীক্ষায় ভালো করার অন্যতম ও প্রধান মূলমন্ত্র হলো নিয়মিত পড়াশোনা করা। আর সেই সাথে পড়াশোনার পাশাপাশি রেগুলার রিভিশন দিতে হবে। এতে করে আপনার পড়াগুলো প্রতিনিয়ত ঝালাই করা হয়ে যাবে।আর সেই সাথে পড়াশোনার পাশাপাশি লিখতে হবে। এতে করে পড়াগুলো মনে গেথে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাতে ভালো করতে নিয়মিত অনুশীলন করার আর কোন বিকল্প পথ নেই।
২। পরীক্ষার পূর্বে নিজেকে যাচাই করা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সম্মুখিন হওইয়ার পূর্বে একজন ভর্তিযোদ্ধার উচিৎ বেশি থেকে মডেল টেস্ট দেওয়া। এই মডেল টেস্ট পরীক্ষার মাধ্যমে নিজের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানা যাবে। আর এর পাশাপাশি আপনি যে সকল বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে সেগুলোও বুঝা যাবে।এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা ও অর্জন হবে। তাই পরীক্ষায় ভালো করতে ভর্তি পরীক্ষার পূর্বে বেশি থেকে বেশি মডেল টেস্ট দিতে হবে।
৩। পরীক্ষার আগের দিন বেশি রাত না জাগা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি একটি দীর্ঘ সময় সাপেক্ষ্য বিষয়। এক রাত পড়ে কখনোই ভর্তি পরীক্ষার ভালো করা পসিবল না। কারন ভর্তি পরীক্ষার সিলেবাস অনেক বড় হয়ে থাকে। তাই কখনোই উচিৎ নয় ভর্তি পরীক্ষার আগের দিন বেশি রাত না জেগে ঘুমিয়ে পড়া।৪। পরীক্ষা শুরুর পূর্বেই কেন্দ্রে যাওয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। তাই পরীক্ষার দিনটা ও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই পরীক্ষার দিন খুব সকালে ঘুম থেকেই উঠে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে হবে। সেই সাথে পরীক্ষা শুরুর কমপক্ষে ৩০ মিনিট পুর্বেই পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হবে।অনেক স্টুডেন্টই পরীক্ষা শুরুর পূর্বে কেন্দ্রে পৌছাতে না পারার কারনে বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্স পাওয়া থেকে ছিটকে পড়। তাই চেষ্টা করতে হবে হতে ঘন্টাখানেক সময় নিয়ে রাস্তায় বের হতে।
৫। পরীক্ষার হলে মাথা ঠান্ডা রাখা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় আমরা অনেকেই অনেক রকমের ভয়ে থাকি। সেই সাথে আমদের মাথাও অনেক গরম থাকে। যার ফলে আমরা অনেকেই রোল রেজিস্ট্রেশন লিখতে ভুল করে বসি।তাই বিশ্ব বিদ্যালইয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় অবশ্যই চেষ্টা করা উচিৎ মাথা ঠান্ডা রাখার । এবং উত্তরপত্র পাবার পরে তারাহুরো না করে আগে দেখা উচিৎ সেটির সবকিছু ঠিক আছে কিনা।
৬। উত্তরপত্রে নিজের সঠিক তথ্য প্রদান
আপনার উত্তরপত্রটি ঠিকঠাক থাকলে (কাটাছেড়া, কোন প্রকারে দাগ, ঘোলাটে ইত্যাদি বিহীন) হলে, আপনি আপনার উত্তরপত্রে আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি (যেমনঃ নাম, রোল, রেজিস্ট্রেশন, সেকশন ইত্যাদি) সঠিক ভাবে পুরুণ করতে হবে।এছাড়া মাতার নাম পিতার নাম সঠিক ভাবে পূরণ করতে হবে। আর পূরণ করার সময় অবশ্যই বলপয়েন্ট এর দ্বারা বৃত্ত গুলো পূরণ করতে হবে। কোন প্রকারের ঘষামাজা করার যাবে না । কারন এই অংশে কোন ভূল হলে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পাবে না ।
৭। বুঝে শুনে উত্তর দেওয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন বুঝে শুনে উত্তর দেওয়া উচিৎ। নতুবা ভুল উত্তর দাগানোর ফলে আপনাকে আফসোস করা লাগতে পারে। সর্বোচ্চ সতর্কতার সহিত প্রতিটি প্রশ্ন পড়ে অতঃপর সেটির সঠিক উত্তর টি করা উচিৎ।কোন মতেই প্রশ্ন পাবার সাথে সাথেই দাগানো উচিৎ না। প্রশ্ন পাবার পরে প্রথমে দুই বার ভাল করা পড়বে। অতঃপর দীর্ঘ একটা শ্বাস নিয়ে বিসমিল্লাহ বলে দাগানো শুরু করবেন। যদি কোন প্রশ্ন আপনার কাছে আন কমন মনে হয় তাহলে সেটি এড়িয়ে চলুন। আর যদি চারটি অপশনের মধ্যে দুটি অপশন আপনার কাছে কনফিউস মনে হয় তাহলে সেটি দাগিয়ে আসুন।
৮। প্রশ্নের নাম্বার দেখে উত্তর প্রদান
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার হলে প্রশ্ন দাগানোর সময় অবশ্যই খেয়াল করা উচিৎ কত নং প্রশ্নের উত্তর প্রদান্ন করতেছেন। কারন অনেক সময় দেখা যায় যে, আপনি উত্তর করবেন ১২ এর খ কিন্তু ভূলবশত দাগিয়ে ফেলেছেন ১৩ নং এর খ। আর এটি একটি পরীক্ষার্থীর জন্য অনেক বড় দুঃখজনক ঘটনা। তাই সবসনয় অনেক বেশি মনোযোগ দিয়ে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর প্রদান করবেন।৯। রিভাইজ দেওয়া
সকল পরিক্ষার ক্ষেত্রেই রিভাইজ একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য তো এটি আরো বেশি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। তাই হল ত্যাগের পূর্বে কমপক্ষে একবার উত্তর পত্র টি রিজাইজ দিয়ে আসতে হবে।অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় নিজের সম্পর্কিত যে সকল তথ্য উত্তর পত্রে দেওয়া হয়েছে তার দু একটা বাদই রয়ে গেছে কিংবা বানান একটু ভূল গেছে। তাই হল ত্যাগের পুর্বে অবশ্যই রিভাইজ দেওয়া দরকার। কারন নিজের সম্পর্কিত তথ্য যদি কোনটা পূরণ বাদ থেকে যায় তাহলে পরীক্ষা দেওয়াটাই বৃথা মনে হবে।
এছাড়াও আরও অনেক ছোট ছোট অনেক টিপস থেকেই যায়। তবে উপোরোক্ত ৯টি হলো অন্যতম এবং সেরা মুলমন্ত্র।
এছাড়াও আরও অনেক ছোট ছোট অনেক টিপস থেকেই যায়। তবে উপোরোক্ত ৯টি হলো অন্যতম এবং সেরা মুলমন্ত্র।
পরিশিষ্ট
ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ভালো মানুষ গড়ার কারিগর। তাই জীবনের ভালো কিছু করার জন্য ভালো মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এই ভর্তিযুদ্ধের মাঠে যুদ্ধ করে ভালো ভার্সিটিতে চান্স পাওয়া একটা বড় রকমের চ্যালেঞ্জ।পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু শর্টকার্ট ট্রিকস ব্যাবহার করে কিছু টিপস ব্যাবহার করে আপনিও চান্স করে নিতে পারেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর এই আর্টিকেলের মাধ্যমে সেই রকমই ৯ টি মূলমন্ত্র শেয়ার করেছি। আশা করি মূলমন্ত্র গুলো আপনাদের অনেক হেল্প করবে ভার্সিটি তে চান্স পেতে।
Comments
Post a Comment